ডাকাতদের থেকে ৪০জন বাস যাত্রীদের রক্ষা করে প্রশংসায় ভাসছেন নোয়াখালীর বাস চালক। বাস চালক মো.সোহেল (৩৮) বর্তমানে গুরুত্বর আহত তিনি হয়ে ২৫০শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোমবার মধ্যরাতে নোয়াখালী টু ঢাকা সড়কের কুমিল্লা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতদের হামলায় বাসচালক সোহেলের চোয়াল থেঁতলে যায়। এতে বাসচালকের মাথা ও চোয়ালে ৩১টি সেলাই দিয়েছে চিকিৎসক। ভেঙে গেছে দুটি দাঁত।
আহত বাস চালক সোহেল সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বএওজবালিয়া গ্রামের গোলাম রহমানের বাড়ির শফিকুল ইসলামের ছেলে। চালক সোহেল জানান, গত ১৫বছর ধরে বাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। গত সোমবার দিবাগত রাতে একুশে পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ৪০জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে নোয়াখালী আসছিলেন তিনি।
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পার হলে ১২থেকে ১৩টি নম্বর বিহীন মোটরসাইকেলে করে একদল তরুণ বাসটি অনুসরণ শুরু করে। এরপর প্রায় ৪০কিলোমিটার পথ বাসটিকে ধাওয়া করেন তাঁরা। একপর্যায়ে কুমিল্লার লাকসাম এলাকায় বাসটি থামানোর জন্য দুই দফায় চালককে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে তাঁরা। এতে চালক আহত হন। এরপরও যাত্রীদের বাঁচাতে রক্ত নিয়ে গুরুত্বর আহত অবস্থায় বাস চালিয়ে যান তিনি। এতে ডাকাতদের থেকে রক্ষা পায় যাত্রীরা।
সোহেল আরো বলেন, দুই দফায় আমার শরীরে ইটের আঘাত লাগে। যাত্রীদের কথা চিন্তা করে বাস চালাতে থাকি। যদি তারা বাস থামাতে পারতো আমাকেও প্রাণে মেরে ফেলতো। এরপর সকল বাধা ডিঙ্গিয়ে বাসটি নোয়াখালী সুধারাম থানার সামনে নিয়ে যাই। পরে যাত্রীরা নেমে থানায় ঢুকে পড়ে।
জানা যায়, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। ঘটনার পরে বাসের মালিক সুধারাম মডেল থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে চান। কিন্তু সুধারাম মডেল থানা থেকে সোনাইমুড়ী থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। সোনাইমুড়ী থানা থেকে আবার লাকসাম থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এদিকে পুলিশ বলছে, মোটরসাইকেলকে পাশ না দেওয়ায় ওই তরুণেরা বাসটির চালকের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে জেনেছে তারা।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও ) রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, সোহেলের মাথা ও চোয়ালে ৩১টি সেলাই দেয়া হয়েছে। ভেঙে গেছে দুটি দাঁত। তবে তাঁর অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। পরে আপডেট জানাবো। তবে বাসের মালিক মামলা দিতে চাইলে মামলা নেওয়া হবে।
