শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের ‘ভয়ঙ্কর’ ষড়যন্ত্রের তথ্য ফাঁস হয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান কে সঙ্গে নিয়ে এই ষড়যন্ত্রের ছক তৈরি করেছিলেন তারা। পরিকল্পনা ছিল একটি ‘জুডিশিয়াল ক্যু’র মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করবেন। আর এতে ওবায়দুল হাসান সহ আরও কয়েকজন যুক্ত ছিলেন। কিন্তু আগেই এই ষড়যন্ত্রের তথ্য পেয়ে যান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা। তাদের দেওয়া তথ্য পেয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার এমন কথা জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ। সেখানে পোস্টটি করেন সহসমন্বয়ক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়কের বরাতে ওসমান গনি নাহিদ তার ভেরিফাইয়েড আইডিতে একই পোস্ট করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে করা এক পোস্টে এমনটি দাবি করেন এই সহসমন্বয়ক। ‘ষড়যন্ত্র ফাঁস’ শিরোনামে তিনি তার টাইমলাইনে যা লিখেছেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো:
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের পদত্যাগের নেপথ্যে কঠিন ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে এক্স প্রধান বিচারপতি সিনহা যেভাবে অবৈধ ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন,ঠিক তেমনি ষড়যন্ত্র করেছিল ওবায়দুল হাসান সহ কয়েকজন।
যে রিপোর্ট এখনও মিডিয়া প্রকাশ করেনি তা নিম্নরূপ: সজীব ওয়াজেদ জয় এতদিন আপনাদের সঙ্গে ‘আমি নাই, মা নাই’ বলে বলে হঠাৎ শুক্রবার রয়টার্সকে বলেছেন তার মা পদত্যাগ করেনি। এটি একটি পরিকল্পিত ঘোষণা ছিল যা বোঝা গেছে আজ ।
সেনাবাহিনীর নিচের দিকের অফিসাররা যদি জনগণের পক্ষে না থাকত, তাহলে আজকে আরেকটা রক্তের বন্যা বয়ে যেত। আজকেও সেনাবাহিনীর ছোট অফিসাররা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থেকে ছাত্র জনতাকে বাঁচিয়েছেন। আজকে একটা ক্যুয়ের প্ল্যান করেছিল জয় এবং আরাফাত। কিন্তু সঠিক সময়ে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা ছাত্রদের কাছে তথ্য ফাঁস করে দেয়। এই তথ্য জানার পরে জুডিশিয়াল ক্যু রুখে দেয় ছাত্ররা।
জয় এবং আরাফাত আর তাদের গাইডদের গোপন প্ল্যান ছিল এ রকম: ড.মোহাম্মদ ইউনুস যখন রংপুরে আবু সাঈদের বাড়ি পরিদর্শন এবং কবর জিয়ারতের জন্য যাবেন এবং তারপর উনার হেলিকপ্টার যখন আকাশে থাকবে,ঠিক সেই সময়ে হাইকোর্টের অ্যাপিলিয়েড ডিভিশনের বিচারপতিরা ফুল কোর্ট বসিয়ে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করবেন।
সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যুয়ের সঙ্গে জড়িত সেনাবাহিনীর ২৫ কর্মকর্তা, চাকরি থেকে কর্মবিরতিতে থাকা দুর্নীতিবাজ পুলিশের একটি দল রাজধানীতে হট্টগোল শুরু করবে আর শেখ হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা মাঠে চলে আসবেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান বিচারপতি সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে হঠাৎ ৫৭ বিচারপতিকে জরুরি মিটিংয়ে ডাকেন। টেলিভিশনের স্ক্রলে জরুরি মিটিং ডাকার সংবাদ দেখে দর্শকরাও কনফিউজড হন। কিন্তু আগে থেকে গোপন খবর পাওয়া ছাত্র জনতা সকাল ৯টার আগেই চতুর্দিক থেকে ছুটে এসে হাইকোর্ট ঘেরাও করে।
সেনাবাহিনীর সমর্থনে প্রধান বিচারপতি পিছু হটতে বাধ্য হন এবং পালিয়ে থাকেন। মিটিং স্থগিত হয়। ছাত্ররা বিচারপতির বাসা ঘেরাও করে রাখে।
সেনাবাহিনী শৃংখলা রক্ষার আবরণে সেখানে ছিল। পদত্যাগপত্র সরকারকে দেওয়া হয়েছে নিশ্চিত হয়ে ছাত্ররা হাইকোর্ট এবং বাসভবন ত্যাগ করে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আপিল বিভাগের আরও পাঁচজন বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।