নোয়াখালীতে বিদূতের সীমাহীন লোডশেডিং। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন । তার মধ্যে গরমে বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।
গত প্রায় এক সপ্তাহ থেকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে নোয়াখালীবাসী। সর্বসাধারণ মানুষের অভিযোগ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না গ্রাহকরা। অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে নষ্ট হচ্ছে ইলেক্ট্রিক- ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও যন্ত্রপাতী এবং কল কারখানার মেশিন।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়ার কারণে লোডশেডিং অনেকটা বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে লোডশেডিং সমস্যা সমাধান হবে বলে মনে করছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার পৌর এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সে হিসাবে জেলায় পিডিবির গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৭৮ হাজার, যার জন্য বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩৪ মেগাওয়াট।
দিনে-রাতে মিলে প্রায় ১২ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে । প্রতি এক থেকে দুই ঘণ্টা পর হচ্ছে এক থেকে দুই ঘণ্টার লোডশেডিং। একই অবস্থা পল্লী বিদ্যুতেরও, শহরমুখী এলাকাগুলোতে লোডশেডিং কিছুটা কম হলেও ভয়াবহ অবস্থা প্রত্যন্ত অঞ্চলের। যেখানে ২৪ ঘণ্টায় ৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পান না গ্রাহকরা।
জেলা শহরের রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আজ সারাদিনে অব্যাহত লোডশেডিং ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে ৩ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ পেয়েছি ২০ মিনিট। অসহ্য গরম আর লোডশেডিং মিলে অতিষ্ঠ জনজীবন। ভয়াবহ লোডশেডিং, যা বলে বুঝানো যাবে না। অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার নোয়াখালীবাসী। ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যায় ১৩-১৪ বার। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যাবে।
কবিরহাটের বাসিন্দা শাহিন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে। কিছু মানুষ বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে, আবার কিছু মানুষ এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে আছে। কিন্তু লোডশেডিং এত বেশি যা বলে বুঝানো যাবে না। শিশু, বৃদ্ধা সবাই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কিরণ বলেন,পুরাতন মেশিন দিয়ে কবিরহাট সাবস্টেশন তৈরী করায় শুরু থেকেই কয়দিন পরপর মেশিন নস্ট হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতো, এখনও একই অবস্থা। যতদিন পর্যন্ত এই পুরাতন-নস্ট মেশিন গুলো পরিবর্তন না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত এই উপজেলার মানুষের দূর্ভোগ দুর হবেনা।
এদিকে কবিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস এর ডিজিএম নিজাম উদ্দিন জানান, কবিরহাটে প্রায় ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এর চাহিদা থাকলেও আমরা দিনের বেলা দেয় ৪/৫ মেগাওয়াট। রাতে দেয় ৭/৮ মেগাওয়াট । এই কারণে ঘনঘন লোড শেডিং হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাব স্টেশনের নস্ট হওয়া মেশিনটি পরিবর্তন করে গতকাল রাতে নতুন মেশিন বসানো হয়েছে।
নোয়াখালী পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হাবিবুল বাহার বলেন, আমাদের ৭৮ হাজার গ্রাহকের চাহিদা রয়েছে ৩৪ মেগাওয়াট। সেখানে পাচ্ছি মাত্র ১৭.৫ মেগাওয়াট। তার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে হাসপাতাল গুলো। সেগুলো কাভার করে যা পারছি তা শিডিউল অনুযায়ী কাভার করছি। মূলত চাহিদার চেয়ে বিদ্যু কম সরবরাহ হওয়ায় লোডশেডিং বেশী হচ্ছে।