মোহাম্মদ ছানাউল্যাহ, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি >>>
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে হাত-পা ও গলায় রশি বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় গৃহবধূকে নির্যাতন করা হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ ৩ সন্তানের জননী। তার নাম শারমিন আক্তারকে (৩০)। নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে নির্যাতনের একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে চরজব্বর থানার পুলিশ। এর আগে, গত ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের চরমজিদ গ্রামের আব্দুল হাদিগো বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিতা শারমিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ১২ বছর আগে পারিবারিক ভাবে একই ওয়ার্ডের নুরনবীর সাথে তার বিয়ে হয়। স্বামী শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি ভিক্ষা করে সংসার চালান। তার এক মেয়ের হার্টের সমস্যা থাকায় ৫০ হাজার টাকা দরকার ছিল। এজন্য স্থানীয় কয়েকটি বাজারে ভিক্ষা করে ১৫হাজার টাকা জোগাড় করেছেন।
ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরতে দেরী হলে স্বামী পর পুরুষের সাথে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে প্রায় সময় গালমন্দ করতো। এভাবে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে- কিছু দিন আগে কাজের সন্ধ্যানে আমি ঢাকা চলে যাই। পরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের কথায় পুনরায় ফিরে আসি।
গৃহবধূ অভিযোগ করে আরও বলেন, গত ১৩ আগস্ট রাতে শ্বশুর বাড়ির পাশের বেলাল সওদাগর নামে এক ব্যক্তি ভরসা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে প্রথমে তিনি আমার সাথে খারাপ আচরণ শুরু করেন।
এরপর ওই দিন রাত ১২টার দিকে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বশুর আব্দুল হাদি, জাল কুলসুমা, নার্গিস, ভাসুরের ছেলে শেখ ফরিদ, হাসান, ভাগনে রাসেল, স্বামী নুরনবী ও তার বোন ছাহেরা খাতুন আমার হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। আমি এতিম, আমার মা-বাবা কেউ নেই। আমার খালাতে ভাইয়েরা আমাকে লালন পালন করে বিয়ে দেয়। খবর পেয়ে তারাই আমাকে উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নুরনবীর মুঠোফোনে কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া বলেন, গৃহবধূর হাত-পা ও গলায় রশি বাঁধা একটি ভিডিও চিত্র একজন সাংবাদিক আমার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। ভিডিও চিত্র দেখে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।