জায়গা-সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা পেতে বাবার মরদেহ আটকে রেখেছিলেন পাঁচ মেয়ে। সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত তারা মরদেহ দাফন হতে দেয়নি। এ কারণে দুই দিন ধরে বাড়ির উঠানে পড়েছিল মরদেহ। পরে প্রশাসনের সহায়তায় ৩৪ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের ঘোষাল গ্রামে। মৃত ব্যক্তির নাম সাকাত গাজী। তার একমাত্র ছেলে মামুন গাজী বাবার সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মেয়েরা। মামুন গাজী বর্তমানে পরিবার নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
পাইকগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সাকাত গাজীর মেয়েরা তার মরদেহ দাফন করতে দিচ্ছেন না শুনে তিনি ওই বাড়িতে যান। পরে মেয়েদের আশ্বস্ত করে দুপুরের দিকে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন। হাসপাতালে মারা যাওয়ার সময় মামুন গাজী যে তার বাবার সম্পত্তি লিখে নিয়েছে তা স্পষ্ট বুঝা গেছে।
মরদেহের বুড়ো আঙুলে তখনো টিপ দেওয়ার লাগানোর ছাপ ছিল। সাকাত গাজীর নামে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার সম্পত্তি ছিল বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, সাকাত গাজী কিডনি জনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ছেলে মামুন গাজী তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে থাকাকালে মামুন বাবার সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেয়।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সাকাত গাজী। তার মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে সটকে পড়েন মামুন। সকাল ৮টার দিকে মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে আসে। পরে স্থানীয়রা মরদেহ দাফন করার ব্যবস্থা করলে মামুনের পাঁচ বোন দাফনে বাধা দেন। এরপর থেকে পুলিশ ওই বাড়িতে না যাওয়া পর্যন্ত মরদেহ ওই বাড়ির উঠানেই পড়েছিল।
সাকাত গাজীর এক মেয়ে লাবনী আক্তার জানান, তার ভাই বাবার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে না জানিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। এ কারণে সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা পেতে তারা মরদেহ দাফনে বাধা দিয়েছেন।
স্থানীয় ঘোষাল জামে মসজিদের ইমাম বেলাল হোসেন জানান, সাকাত গাজীর মৃত্যুর সংবাদ শুনে বুধবার বাদ জোহর জানাজার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির পাঁচ মেয়ে এসে জানাজা ও মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ায় এলাকাবাসী সিদ্ধান্ত নেন সাকাত গাজীর জানাজা তারা পড়বেন না।