ঢাকাশুক্রবার , ২৭ অক্টোবর ২০২৩
  1. NGO
  2. Uncategorized
  3. অপরাধ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন আদালত
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. কৃষি ও কৃষক
  9. খেলাধুলা
  10. চাকুরি
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. দূর্ঘটনা
  14. দূর্নীতি
  15. ধর্ম

প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন

বগুড়া জেলা প্রতিনিধি
অক্টোবর ২৭, ২০২৩ ২:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

Spread the love

বগুড়া জেলা প্রতিনিধি >>> পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গোপন রাখতে বগুড়ার শিবগঞ্জে পূজামণ্ডপের দায়িত্বে থাকা নারী আনসার সদস্য আশা দেবী মোহন্তকে শারীরিক সম্পর্কের পর হত্যা করেছিলো তারই সাবেক প্রেমিক।

(প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন)

(প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন)

ঘটনার সাথে জড়িত নয়ন কে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত নয়ন (৩৫) শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।

এর আগে, গত ২৩ অক্টোবর রাতে নিজ বাড়িতে খুন হন একই এলাকার ভজন মোহন্তের স্ত্রী আনসার সদস্য আশা দেবী। তিনি বানাইল উত্তরপাড়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে আসামি নয়ন এবং আশা দেবীর মধ্যে গত ৮-৯ মাস পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নিহত আশা দেবী বিবাহিত ছিলেন। আর নয়ন অবিবাহিত থাকাকালীন তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক চলমান ছিলো।

তবে নয়ন গত ৩ মাস আগে অন্য একজন নারীকে বিয়ে করে। এরপর আশা দেবীর সাথে নয়ন যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এটি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

এক পর্যায়ে নয়ন পরকীয়ার সম্পর্ক যেন কেউ না জানে, সেজন্য আশা দেবীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পুলিশ সুপার বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রাতে আশা দেবী যখন তার ডিউটি থেকে বাসায় ফিরছিলো তখন পথিমধ্যে নয়ন তার পিছু নেয়। আশা দেবী বাড়িতে প্রবেশ করে পুজায় যাওয়ার জন্য তার আনসার ভিডিপির পোশাক পরিবর্তন করছিলেন।

(প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন)

(প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন)

ওই সময় বাড়িতে কেউ ছিলো না। এমন সময় নয়ন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে আশা দেবীর ঘরে যায়। নয়নকে দেখে আশা দেবী রাগ করলেও নয়ন ফুসলিয়ে তার সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক তৈরি করে।

এরপর নয়ন মোবাইলচার্জারের ক্যাবল দিয়ে আশা দেবীর মুখের মধ্যে পেচিয়ে এবং পাশে থাকা ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার লাশ সোফার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ২৫ অক্টোবর রাতে আসামি নয়ন কে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের পাশের সড়কের একটি কুকুরের গতিবিধি পর্যালোচনায় আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ।

ঘটনাস্থলের পাশের সড়কের এক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ২৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার নবমীর রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে বগুড়া শিবগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের শিকার নারী আনসার সদস্য আশা দেবীর বাড়ির পেছনের গলি থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসছে এক ব্যক্তি যার চোখে মুখে ছিলো ভয় ও দুশ্চিন্তার ছাপ।

 

ফুটেজে আশ্চর্যের বিষয় হলো অচেনা কেউ হলে তো সড়কে থাকা কুকুরটি চেঁচিয়ে উঠতো।

কিন্তু সন্দেহভাজন এই ব্যক্তির চলাফেরাতে বেশ শান্ত দেখায় কুকুরটিকে যাতে পুলিশ ক্লু পায় ঘাতক ব্যক্তিটি বাহিরের কেউ নন বরং ওই এলাকারই।

ঘটনার দিন থেকে শিবগঞ্জের ওসি আব্দুর রউফের নেতৃত্বে গভীর তদন্তের পর সনাক্ত করা হয় সিসিটিভি ফুটেজের সেই ব্যক্তিকে যিনি ছিলেন নিহতের সাবেক প্রেমিক প্রতিবেশী নয়ন।

বুধবার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে অভিযুক্ত নয়ন।

এসপি আরও জানায়, প্রায় গত ৮-৯ মাস আগে থেকে আশা দেবীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে নয়ন ইসলামের। পরিবার বা এলাকার কেউ তাদের সম্পর্ক আঁচ করতে পারেনি।

(প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন)

(প্রেমিকাকে হত্যা, কুকুরের গতিবিধিতে রহস্য উদঘাটন)

তিন মাস আগে নয়নের বিয়ে হলে আশা দেবীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি যেনো আর কখনই প্রকাশ্যে না আসে সেই উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান অভিযুক্ত নয়ন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রাতে আশা দেবী যখন তার ডিউটি থেকে বাসায় ফিরছিলো তখন পথিমধ্যে নয়ন তার পিছু নেয়। এক পর্যায়ে নয়ন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে আশা দেবীর ঘরে যায় এবং নয়নকে দেখে আশা দেবী প্রথমে রাগ করলেও তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক করে।

এরপর নয়ন মোবাইল চার্জারের ক্যাবল দিয়ে আশা দেবীর মুখের মধ্যে পেচিয়ে দিয়ে এবং পাশে থাকা ওড়না দিয়ে আশা দেবীর গলা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

উলেখ্য, নবমীর রাতে বগুড়া বানাইল উত্তরপাড়া পূজা মণ্ডপে দায়িত্ব শেষে বাড়ি ফিরলে হত্যা করা হয় নারী আনসার দলনেত্রী আশা দেবীকে।

মঙ্গলবার এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন পরবর্তী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই প্রেস ব্রিফিং এ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুর রশিদ, শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রউফ, মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশিক ইকবালসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।