
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাতিজার হামলায় চাচার মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের মাওতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মাওতলা রাজমন্দা বাড়ির ইয়াকুব নবী (৬৫)। অভিযুক্ত হামলাকারী ভাতিজা একই বাড়ির নূর নবীর ছেলে শাহ আলম।।
এলাকাবাসী জানায়, নূর মিয়া মার্কেটের পশ্চিম পাশ্বের আল-মদিনা মসজিদ সংলগ্ন আড়াই শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে চাচা-ভাতিজার বিরোধের চলছে। বিগত ২০ বছর যাবত ওই জমি দখল করে রেখেছে শাহ আলম।। গত শুক্রবার জমিটি বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয় ইয়াকুব নবীর ছেলে নাসির আহম্মেদ।
ঘটনার দিন রবিবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এই জমির বিষয়ে শালিস মিমাংসার দিন ধার্য ছিলো। তবে শালিসের পূর্বেই শাহ আলম ও তার লোকজন ঘেরা উপড়ে ফেলতে থাকে। পরে ইয়াকুব নবী ও তার ছেলে-মেয়েরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের মারধোর করা হয়। এক পর্যায়ে শাহ আলমের আঘাতে ইয়াকুব নবী মাটিতে পড়ে যায়।
স্থানীয় শালিসদার হুমায়ুন কবির জানান, এই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলমান। কাগজ-পত্র অনুযায়ী জমির মালিক হচ্ছেন ইয়াকুব নবী। কয়েকবার বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করা হলেও তা মানেনি শাহ আলম। সেই জের ধরে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মারামারি হয়। সেখানে প্রতিপক্ষের আঘাতে ইয়াকুব নবী মারা যায়।
নিহতের মেয়ে সুমি বেগম জানান, ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন। তার চাচাতো ভাই শাহ আলম পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম থাকেন। ঘটনার দিন শাহ আলমের সাথে জমি নিয়ে পারিবারিক ভাবে বসার কথা ছিলো। তবে শাহ আলম বাইরের চার-পাঁচ জন লোকজন ভাড়া করে এনে জমিতে দেওয়া বেড়া ভাংচুর শুরু করে। বাঁধা দিতে গেলে সুমির বড়ভাই নাসির আহম্মেদ, ছোট ভাই মিলনকে মারধোর করে। তার বাবাকে মারধোরের একপর্যায়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাওতলা গ্রামের কুলসুম বেগম জানান, ইয়াকুব নবী মারামারি থামাতে গেলে শাহ-আলম তার গলা চেপে ধরে বুকে ঘুসি মারতে থাকে, একপর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে যায়।
এসময় শাহ আলমের ভাগিনা ইয়াকুব নবীকে মারধোর করতে থাকে, এক পর্যায়ে অন্ডকোষে লাথি দেয়। এর পরপরই সুমির বাবা ইয়াকুব নবী নিস্তেজ হয়ে পড়ে যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। অভিযুক্ত শাহ আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশ দাফনের জন্য মাওতলা রাজমন্দার বাড়িতে আনা হয়েছে। দাফন শেষে সোনাইমুড়ী থানায় মামলা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনেরা।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানান, এই ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দেওয়া হলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।