বিশেষ প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালী জেলার ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ শারদীয় দুর্গোৎসব হওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ভূয়সী প্রশংসা। শান্তি বিরাজ করছে সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে।
বুধবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে প্রতিমা বিসর্জ্জনের মাধ্যমে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ উৎসব দুর্গোৎসব দূর্গাপুজা। এরপর থেকে প্রশংসায় ভাসছেন পুলিশ সুপার।
বিনয় কুমার দেবনাথ নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার আইডিতে লিখেন, এমন পুলিশ সুপার পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। যিনি দিন-রাত এক করে দিয়ে উৎসব ঘিরে নিরাপত্তা দিয়েছেন। স্যার আপনাকে স্যালুট।
তমা বনিক নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, গত বছর দুর্গাপূজায় হামলা হয়েছিলো। আমরা তাতে ঠিকমতো অংশগ্রহণ করতে পারি নাই। এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। পুলিশ সুপার স্যার সব মন্দিরে মন্দিরে এসেছেন। আমরা শান্তিতে পূজা উদযাপন করেছি।
ছোটন দাস লিখেন, আমরা ভয়ে ছিলাম তবে নিরাপত্তা দেখে অবাক হয়েছি। আমরা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। বিশেষ করে পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আমাদের নোয়াখালীবাসীর জন্য গর্ব।
পুজোয় নিরাপত্তায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, জেলায় এবার ১৮০ টি পূজামণ্ডপে নান্দনিক, প্রাণবন্ত, স্বতঃস্ফূর্ত, আনন্দঘন, সার্বজনীন, উৎসবমুখর, নিরাপদ দুর্গোৎসব আয়োজনের ক্ষেত্রে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের সৃষ্টির মাধ্যমে সম্মানিত জনগণকে নিরাপদ সময় উপহার দেওয়ায় পুলিশ সুপার জেলায় কর্মরত আইনসৃংখলা বাহিনীর সকল পর্যায়ের গর্বিত সদস্যদেরকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, সম্মানিত জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমকর্মী সর্বোপরি আয়োজকদের সক্রিয় অংশগ্রহণে সামাজিক সুরক্ষা বলয় নির্মাণের মাধ্যমে নোয়াখালী জেলার ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
উলেখ্য, ২০২২ সালে নোয়াখালীতে ১৮০ টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব হয়েছে। এসব মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ছিল প্রায় সহস্রাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রসংগত: ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল নোয়াখালীর চৌহমুনীতে এলাকার অন্তত ১১টি পূজামণ্ডপ ও ৬টি মন্দিরে একযোগে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া বেগমগঞ্জের ছয়ানীতে ১টি পূজামণ্ডপ, ১টি কালি মন্দির ও দুর্গাপুরে ১টি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে চৌহমুনীর সেই ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে ২ জনের প্রাণহানিসহ লুটপাট করা হয় মন্দিরগুলোর অর্থ, ভাঙচুর করা হয় মণ্ডপগুলোর প্রতিমা।
নোয়াখালী মিডিয়া/নিউজ