নোয়াখালীর সুবর্ণচরের কথিত ভূমিদস্যু,গরু চুরির হোতা, মিথ্যা মামলাবাজ ও পতিতা সর্দার আলেয়ার বিচারের দাবীতে এলাকার নারী-পুরুষ সহ সর্বস্তরের জনগণ বিশাল মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
বুধবার (৩০অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এলাকাবাসীর আয়োজনে উপজেলার চরবাটা ভূইয়ার হাটে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা সহ শত-শত নারী, পুরুষ অংশ গ্রহন করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় ভুক্তভোগী নারী নাজমা, তাছলিমা, হাজেরা, আফরোজা এবং মোহাম্মদ উল্যাহ, আবদুল আলীম ও সিরাজ সহ শতাধিক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে তথাকথিত আলেয়া অসহায় হয়ে অন্য এলাকা থেকে সুবর্ণচরের চরমজিদে আসার পর এলাকাবাসী আলেয়াকে সার্বিক সহযোগিতার করে বসবাসের সুযোগ করে দেয়। এরপর থেকে নানা ধরনের অবৈধ কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে আলেয়ার উত্থান শুরু হয়। প্রথমে আলেয়া নিজে দেহ ব্যবসা শুরু করে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংশের পথে নিয়ে যায়।
পরে সে তার নিজ বাড়িতে মিনি পতিতালয় খুলে জমজমাট দেহ ব্যবসা করতে থাকে। শুধু তাই নয় আলেয়া তার বাড়ীতে চোর ডাকাতদের কে আস্তানা তৈরী করে থাকার সুযোগ করে দিয়ে এলাকায় চুরি,ডাকাতি ও রাহাজানি বাড়িয়ে দিয়ে শান্তি-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।
বিগত ২০২২ সালে সুবর্ণচরের আলোচিত গরু চুরির ঘটনায় আলেয়ার ছেলে মোঃ ইলিয়াছ ওরফে রিয়াজ গরু চুরি করে পিকআপে করে গরু নেওয়ার পথে চোরাই গরু সহ সুবর্ণচরে সড়ক দুর্ঘটনায় রিয়াজ মারাত্মক ভাবে আহত হলে চর জব্বর থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে পুলিশের তদন্তে রিয়াজকে গরু চোর হিসেবে সনাক্ত করা হয়। গরু চুরির ফৌজদারি এ মামলাটির বাদী মোঃ সেলিম, মামলা নং ও সন ৪৫৮/২২। এ মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
শুধু তাই নয় ভূমিদস্যু আলেয়া চরমজিদের মুক্তিযোদ্ধাদের জমির কাগজ-পত্র জাল-জালিয়াতির করে ইতিমধ্যে চরমজিদ ভূঁইয়ার হাটের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিসের ঘর সহ জায়গা জবরদখল দখল করে দোকান ঘর তৈরী করে বিক্রি করে দিয়েছে। অন্যদিকে চরমজিদে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কলোনির বিশাল দিঘি জবরদখল করে দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে আসছিল।
এছাড়াও ইতিমধ্যে ভূমিগ্রাসী আলেয়া চরমজিদের বাসিন্দা এনজিও কর্মী সিরাজের ২ একর, এনামুল হকের ২ একর, হাফেজ মোহাম্মদ উল্লার ২ একর সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক অসহায় পরিবারের নারী শিশু সহ সকল সদস্যে কে হামলা করে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ভিটেমাটি জবরদখল করে নিয়ে পরে বিক্রি দিয়েছে।
চর মজিদের ভূমিহীন মোঃ আলিমকে তার বসত বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার জন্য আলেয়া একাধিকবার হামলা করে তার বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং এ পর্যন্ত আলিমের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা সহ ২২টি মিথ্যা দায়ের করে আলেয়া। এসব কাজে আলেয়াকে তার স্বামী বেলাল ও ছেলে স্বাধীন, রিয়াজ এবং সোহেল সহ তার পরিবারের নারী-পুরুষ সহ সকলে তাকে সরাসরি সহযোগিতা করে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
আলেয়ার প্রধান কাজই হল, মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি সংগ্রহ করে এবং স্বাক্ষর নকল করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া কাগজ পত্র তৈরী করে তাদের জমি সে ক্রয় করেছে বলে প্রথমে দখল করে নেয় পরে আবার বিক্রি করে দেয় । এদিকে আলেয়া গত কয়েক বছর ধরে গোপনে গোপনে মাদক ব্যবসাও করে যাচ্ছে এবং কুমিল্লা সহ বিভিন্ন জেলার আন্তজেলা চোর-ডাকাত চক্রের মাধ্যমে সুবর্ণচরে চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটায় বলে জানায় এলাকাবাসী।
কেউ তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলে সে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। এ পর্যন্ত আলেয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা বাদী হয়ে এলাকার কয়েক জন নিরিহ মানুষের নামে প্রায় অর্ধ শতাধিক মিথ্য মামলা করেছে বলে জানা গেছে। সর্বপরি আলেয়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। পুরো এলাকাকে সে জিম্মি করে রেখেছে । সে সব সময় তার যা ইচ্ছা তাই করেই যাচ্ছে। তার এসব অপকর্ম যেন দেখার কেউ নেই।
তথাকথিত এ নারী সন্ত্রাসী আলেয়ার অপকর্মে পুরো নারী সমাজের সন্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। বর্তমানে আলেয়াসহ তার স্বামী এবং ছেলেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, জবর দখল, মারামারি, প্রতারনা ও চুরি- ডাকাতি সহ প্রায় ১৪ টি মামলা চলমান রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
মানববন্ধন থেকে এ তথাকথিত মহিলা আলেয়ার বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধন শেষে শত-শত নারী-পুরুষ ভূঁইয়ার হাটে কথিত আলেয়ার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।