বাংলাদেশের মানুষের মন জগতের পরিবর্তন না বুঝলে, বিএনপির রাজনীতি আগামী দিনে কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ যে লুটপাট, চাঁদাবাজি, যে মাস্তানি, যেভাবে দখল করেছে। সেটা কি আমরা করতে পারবো? আপনারা কি সেটা করতে পারবেন? বাধা দিতে হবে।
গত ১৪-১৫ দিনে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতের যে পরিবর্তন। আমরা যদি না বুঝি, বিএনপির রাজনীতি আগামী দিনে কঠিন হয়ে যাবে। সবাইকে জনগণের স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখতে হবে। কোনো ধরনের অন্যায়-অবিচার করতে দেওয়া যাবেনা। চাঁদাবাজি মাস্তানি দখলদারি করতে দেওয়া যাবেনা। যারা করবে তাদেরকে বাধাগ্রস্থ করতে হবে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চেউয়াখালী বাজারে বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। শেখ হাসিনাও নয় তার পরিবারও নয়। মালিক হচ্ছেন বাংলাদেশের জনগণ। এ বিশ্বাস কিন্ত বিএনপিকে রাখতে হবে। ওই যে বিতাড়িত স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিবাজ, নিপীড়নকারী চলে গেছে। আমাদেরকে পরিবর্তন হতে হবে। আমরা আবার সে দিকে চলতে পারবোনা।
বাংলাদেশের মানুষের মন মানসিকতা, মনোজগত পরিবর্তন হয়ে গেছে। সেই ফ্যাসিস্ট পালানোর পরে, বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতের বড় পরিবর্তন আসছে। তারা একটি সুষ্ঠু সামাজিক শান্তিপূর্ণ ন্যায় বিচারের বাংলাদেশ দেখতে চায়। সকল নাগরিকের সমান অধিকার দেখতে চায়।
দলীয় নেতা-কর্মিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যদি তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে চান, তাহলে ন্যায়ের পথে চলতে হবে। এর বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষের আজকে যে প্রত্যাশা আকাঙ্খা জেগেছে। যে নুতন সূর্য উঠেছে বাংলাদেশে। সেটাকে মাথায় রাখতে হবে। রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। তা না হলে বেশি দিন টিকা যাবেনা। বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ নাগরিকের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। তাদের মনোজগত বুঝতে হবে। যুবকের চিন্তা, আকাঙ্খা, চাহিদা বুঝতে হবে।
খসরু বলেন, এই বর্তমান সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। ১৬ বছরআমাদের নেতা-কর্মিদের গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, চাকরি হারানো, ব্যবসা হারানো, পথে-পথে ঘুরে বেড়ানো, পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু, নিপীড়ন-নির্যাতন। সে প্রতিবাদ বিএনপি করেছে। তার ফলশ্রুতিতে ১৬ বছর পরে ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার প্রচেষ্ঠায় সেটার সুফল আমরা পেয়েছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। এই ফ্যাসিস্ট বিতাড়িত হওয়ার পরে শেখ হাসিনার সহযোগী ও তার ষড়যন্ত্রের সাথে যারা জড়িত ছিল তারা বসে নেই। আপনারা ভুল করবেন, তারা কিন্ত ভুলের সুযোগ নিয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করবে। এজন্য ভুল করা যাবেনা। যারা পরাজিত শক্তি, তারা কিন্ত এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছে।
সুতারাং আমাদেরকে জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে যে আকাঙ্খার সৃষ্টি হয়েছে, সকলে মিলে সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। একটি গোষ্ঠি বাংলাদেশের অর্থ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে সম্পদ পুঞ্জীভূত করে। বাকী মানুষ অর্থাভাবে, খাদ্যভাবে দিন কাটাবে। সেই বাংলাদেশ আমরা আর দেখতে চাইনা।
সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়ার সভাপতিত্বে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য মো.শাহজাহান।
এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।